রোববার, ১৯ অক্টোবর ২০২৫

| ২ কার্তিক ১৪৩২

ব্যক্তিগত উপাত্তের ব্যবহার

জাতীয় নিরাপত্তা, প্রতিরক্ষা, জনশৃঙ্খলায় অনুমতি নিবে না সরকার

টেকস্ক্রল নেটওয়ার্ক

প্রকাশ: ১৭:০০, ৯ অক্টোবর ২০২৫

জাতীয় নিরাপত্তা, প্রতিরক্ষা, জনশৃঙ্খলায় অনুমতি নিবে না সরকার

ব্রিফ করছেন টেলিকম ও আইসিটি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব: ছবি প্রেস উইং

ব্যক্তিগত উপাত্ত যে কাজে সংগ্রহ করা হবে, তা ছাড়া  অন্য কোনো  কাজে  ব্যবহার না করার বিধান রেখে পাস করা হয়েছে প্রস্তাবিত ব্যক্তিগত উপাত্ত সুরক্ষা অধ্যাদেশ, ২০২৫।  বৃহস্পতিবার বেলা ৩টার দিকে রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান, ডাক, টেলিযোগাযোগ তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব। বলেন, উপাত্ত-জিম্মাদার ব্যক্তিগত উপাত্ত নির্ধারিত মেয়াদের অতিরিক্ত মেয়াদে ধারণ করতে পারবেন না। 

ব্রিফিংয়ে জানানো হয়, ব্যক্তিগত উপাত্ত প্রক্রিয়াকরনে এর গোপনীয়তা, বিশ্বস্ততা, সুরক্ষা নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণসহ ন্যায্যতা, আন্তঃপরিবাহিতা, ডিজিটাল অর্থনীতির সম্ভাবনা সুরক্ষিত করা এবং দায়িত্বশীল উদ্ভাবনকে উৎসাহিতকরণ ইত্যাদি চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় তথ্য যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ ‘ব্যক্তিগত উপাত্ত সুরক্ষা অধ্যাদেশ, ২০২৫ প্রণয়ণ করে প্রস্তাবিত অধ্যাদেশটি জারী হলে উপাত্ত সংগ্রহ, প্রক্রিয়াকরণ, মজুত বা ধারণ, ব্যবহার বা পুন:ব্যবহার, স্থানান্তর, প্রকাশ, বিনষ্টকরণ, আন্তর্জাতিক মান বজায় সর্বোপরি ডিজিটাল সেক্টরের উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে মনে করেন ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব।

প্রস্তাবিত অধ্যাদেশে ব্যক্তির ডেটা বা উপাত্ত তার মালিকানাধীন বিবেচনা করা হবে।  ব্যক্তির সম্মতি নিয়ে আইনসম্মতভাবে তা প্রক্রিয়া বা বক্যবহার করা হবে। এ জন্য ব্যক্তিগত উপাত্ত সংগ্রহ প্রক্রিয়াকরণের জন্য এ উদ্দেশ্য, ধারণ-মেয়াদ, স্থানান্তর প্রত্যাহারের প্রক্রিয়া সম্পর্কে  জানিয়ে, এরপর উপাত্তধারীর সম্মতি  নেয়ার বিধান রাখা হয়েছে।

কোনো উপাত্ত-জিম্মাদার, মূল উদ্দেশ্যের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ হলে উপাত্তধারীর ব্যক্তিগত উপাত্ত অধিকতর প্রক্রিয়া করার বিধান রাখা হয়েছে অধ্যাদেশে। 

শিশু বা সম্মতি প্রদানের সক্ষম নয় এমন ব্যক্তি সম্পর্কিত উপাত্ত প্রক্রিয়াকরণে পিতামাতা বা আইনগত অভিভাবক বা সিদ্ধান্ত প্রদান করতে ক্ষমতাপ্রাপ্ত এমন ব্যক্তির সম্মতি গ্রহণ বাধ্যতামূলক থাকবে।

 উপাত্তধারীর লিখিত আবেদনের মাধ্যমে এর জিম্মাদারের  কাছে উপাত্তধারীর অধিকার প্রয়োগের বিধান  করেছে সরকার।  সংবেদনশীল ব্যক্তিগত উপাত্ত শর্তসাপেক্ষে প্রক্রিয়াকরণ, উপাত্ত-জিম্মাদার কর্তৃক প্রক্রিয়াকৃত উপাত্তে এর মালিকের  অ্যাকসেস থাকবে।  উপাত্তধারী যে-কোনো সময় সম্পূর্ণ বা আংশিকভাবে তার সম্মতি প্রত্যাহার করার সুযোগ রেখে বলা হযেছে, উপাত্তধারীর সম্মতি ছাড়া, যে উদ্দেশ্যে ব্যক্তিগত উপাত্ত সংগ্রহ করা হয়েছিল সে উদ্দেশ্যে ব্যতীত অন্য কোনো উদ্দেশ্যে ব্যক্তিগত উপাত্ত প্রকাশ  করা যাবে না।

এই অধ্যাদেশের অধীনে গঠিত কর্তৃপক্ষ থেকে  ক্ষমতাপ্রাপ্ত কোনো স্বতন্ত্র উপাত্ত নিরীক্ষকের মাধ্যমে নির্ধারিত সময়ে ব্যক্তিগত উপাত্ত প্রক্রিয়াকরণ সংক্রান্ত কার্যক্রম-নিরীক্ষা করা হবে। 

 তবে, জাতীয় নিরাপত্তা, প্রতিরক্ষা, জনশৃঙ্খলা বা জনস্বার্থ, অপরাধ প্রতিরোধ, তদন্ত, কর ফাঁকি প্রতিরোধ, জনস্বাস্থ্য, সরকারি তহবিলের অপব্যবহার, অনুসন্ধান বা তদন্ত, পরিসংখ্যান প্রস্তুতকরণ , শিক্ষা, শৈল্পিক কাজ বা সাহিত্য রচনা ইত্যাদি ক্ষেত্রে ব্যক্তিগত উপাত্ত প্রক্রিয়াকরণের প্রয়োজন হলে উপাত্তধারীর সম্মতি নিবে বা সরকার। 

 সরকার ব্যক্তিগত উপাত্তকে  ৪ ভাগ করেছে। ১. পাবলিক বা উন্মুক্ত  ২.অভ্যন্তরীণ  ৩. গোপনীয় এবং0৪.  সীমাবদ্ধ ব্যক্তিগত উপাত্ত;

অধ্যাদেশের উদ্দেশ্য পূরণে দ্বিপাক্ষিক, বহুপাক্ষিক ও আন্তঃসীমান্ত ব্যক্তিগত উপাত্ত বিনিময় এবং অন্যান্য সহযোগিতার উদ্দেশ্যে অন্য যে-কোনো দেশ বা বহুপাক্ষিক সংস্থা বা কনসোর্টিয়াম বা ফোরামের সাথে সংযুক্তির বিধান রাখা হয়েছে।  তবে,  উপাত্তধারীর অধিকার লঙ্ঘিত হলে প্রশাসনিক জরিমানা এবং ক্ষতিপূরণ আদায় করা যাবে। অধ্যাদেশের বিধান লঙ্ঘন করে অসৎ উদ্দেশ্যে প্রক্রিয়াকরণ, অননুমোদিতভাবে প্রবেশ বা হস্তক্ষেপ, বেআইনী টেম্পারিং, অপব্যবহার, সংবেদনশীল ব্যক্তিগত উপাত্ত অননুমোদিতভাবে প্রক্রিয়াকরণ ইত্যাদি ক্ষেত্রে দন্ড আরোপ করা হবে। 

এ সম্পর্কিত খবর
আরও পড়ুন