নির্বাচিত সরকার টেলিকম নীতিমালা রিভিউ করবে

টেলিকম নীতিমালা ‘ক্রিটিক্যাল’  উল্লেখ করে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, নির্বাচিত সরকার টেলিকমসহ সব নীতিমালা রিভিউ করবে।

‌‌‌আগামীর বাংলাদেশ বিনির্মাণের চ্যালেঞ্জ: টেলিযোগাযোগ ও তথ্য প্রযুক্তি খাতের দেশীয় উদ্যোক্তাদের ভবিষ্যত নিয়ে শনিবার  ঢাকার একটি হোটেলে টিআরএনবি আয়োজিত সেমিনারে তিনি আরও বলেন, অংশীজনদের মতামত নিয়ে এসব নীতিমালা করতে হবে। গত ১৫ বছরে এই খাতে যে ধরনের লাইসেন্স দেওয়া হয়েছে, বিটিআরসির স্বাধীনতা ধ্বংস করা হয়েছে, তাতে এখানে একটা বড় ধরনের পরিবর্তন দরকার। যে পরিবর্তনের ফলে দেশীয় উদ্যোক্তা এবং ডিজিটাল সিকউরিটিকে সুরক্ষা দেওয়া সম্ভব হবে। যে খাতে এত লাভ, সেখানে দেশীয় বিনিয়োগকারীরা বিনিয়োগ করতে পারবে না কেন? নীতিমালা করার সময় এগুলো মাথায় রাখতে হবে।

অনুষ্ঠানে বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য জহির উদ্দিন স্বপন বলেন, নীতিমালার ক্ষেত্রে ডিজিটাল সভরেন্টি নিয়ে আমাদের ভাবতে হবে। নীতিমালায় ডিজিটাল নিরাপত্তা নিশ্চিত হয় কিনা, সে বিষয়টি বিবেচনা করতে হবে। জবাবদিহিতাবিহীন নীতিমালা হতে পারে না।

গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি বলেন, আগামীর চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নীতিমালা প্রয়োজন।

বিদেশি কোম্পানিগুলো কতটা জবাবদিহিতার আওতায় রয়েছে? এমন প্রশ্ন তুলে তিনি বলেন, নীতিমালায় এমন সব ধারা রাখা হয়েছে যা দেশীয় প্রতিষ্ঠানের হাত থেকে বাজারকে সরিয়ে বিদেশি কোম্পানির কাছে তুলে দেওয়ার পথ তৈরি করছে।

তিনি বলেন, বন্দর পরিচালনাসহ বিভিন্ন খাত বিদেশিদের হাতে তুলে দেওয়া হচ্ছে। অথচ আমরা চাই আমাদের অর্থনীতি ও ব্যবসা-বাণিজ্য নিজস্ব ভিত্তির ওপর দাঁড়াক। এই খাতে কর্মরত পাঁচ থেকে সাত লাখ মানুষের কর্মসংস্থান ঝুঁকির মধ্যে ফেলে এমন নীতিমালা আমরা মেনে নিতে পারি না।

ফাইবার অ্যাট হোমের চেয়ারম্যান মইনুল হক সিদ্দিকী বলেন, ঢাকার বাইরেও এনটিটিএন সংস্থাগুলো সেবা সম্প্রসারণ করেছে—তার প্রমাণ পাবেন আপনারা সেখানে গেলে। সেখানে গিয়ে ইন্টারনেটের গতি দেখলেই তা বোঝা যায়। অথচ বর্তমান টেলিকম নীতিমালায় দেশীয় উদ্যোক্তাদের স্বার্থ রক্ষা করা হচ্ছে না, বরং কর্মসংস্থানের ক্ষেত্রেও নতুন উদ্বেগ তৈরি হয়েছে।

ইন্টারনেট সেবাদাতাদের সংগঠন আইএসপিএবি সভাপতি আমিনুল হাকিম বলেন, গ্রাম থেকে শহর পর্যন্ত দেশের আইএসপিরা সেবা দিয়ে আসছে। এ খাতে আড়াই হাজার ব্যবসায়ী এবং সাড়ে চার থেকে পাঁচ হাজার কোটি টাকার বিনিয়োগ রয়েছে। টেলিকম নীতিমালার বিরুদ্ধে প্রধান রাজনৈতিক দলগুলো সংবাদ সম্মেলন করেছিল, তাই আমরা আশা করেছিলাম সরকার নীতিমালা বাতিল করবে, কিন্তু তা করা হয়নি।

ফাইবার অ্যাট হোমের সুমন আহমেদ সাবির অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন। বক্তব্য দেন এআইওবি সদস্য ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) মোস্তাফিজুর রহমান, বাহন লিমিটেডের রাশেদ আমিন বিদ্যুৎ, সাংবাদিক মাসুদ কামাল ও টেলিযোগাযোগ নীতি বিশ্লেষক আবু নাজম তানভীর হোসাইন, টিআরএনবি সভাপতি সমীর কুমার দে, সাধারণ সম্পাদক মাসদুজ্জামান রবিন প্রমুখ।